1. shimulvisa@gmail.com : Md Shimul : Md Shimul
  2. sumayait1989@gmail.com : Sumaiya It : Sumaiya It
  3. wordpUser10@org.com : supe1User10 :
রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন

সিলেটে বন্যায় কোটি টাকার ধান-চাল গুদামেই নষ্ট

সিলেট প্রতিনিধি :
  • Update Time : রবিবার, ২২ মে, ২০২২
  • ১৯৮ Time View

করোনাকালের দুই বছরের ধাক্কা সামলে উঠেছিলেন সিলেটের মানুষ। কিন্তু গ্রীষ্মে অতিবৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট বন্যায় আবারো মানুষজন পড়েছেন বেকায়দায়।

করোনাকালের চেয়েও ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন সিলেটের সব শ্রেণি পেশার মানুষ।
উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে ডুবেছে সিলেট নগরের প্রায় অর্ধেক এলাকা। বানবাসী হয়েছেন ১৩ উপজেলার মধ্যে ১০টির শতাধিক ইউনিয়নের লোকজন। বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকে। সে ক্ষতি অংকের হিসেবে পোষাবার নয়! গ্রীষ্মে ভয়ঙ্কর বন্যা ২০০৪ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়েছে।

গত ১১ মে থেকে অতিবৃষ্টি আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানি বুকে ঠাঁই দিতে পারেনি সুরমা। ফলে পানি উপচে প্লাবিত হয়েছে গ্রাম-নগর সব প্লাবিত হয়েছে। কৃষিজীবী থেকে ব্যবসায়ী, সব শ্রেণির মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

বানবাসী হয়েছেন অন্তত ১০ লক্ষাধিক মানুষ। বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন কৃষকরাও। সম্প্রতি ঘরে তোলা বোরো ফলসও বানের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অবারিত বর্ষণে ঘরে রাখা ধানে চারা গজিয়েছে।

শনিবার (২১ মে) থেকে নদ-নদীর পানি খানিকটা স্থিতিশীল হওয়াতে নগর থেকে পানি নেমে যায়। চারিদিকে মানুষ যখন খাবার সংকটে, তখন বন্যা পরবর্তী ক্ষতির দিকটা ফুটে উঠছে ক্রমশ।

সরেজমিন নগরের কাজিরবাজার ধান-চালের মিল ও আড়তে গিয়ে দেখা গেল বৈরী চিত্র। গুদামে রাখা সারি সারি ধান-চালের বস্তা ভিজে নষ্ট হয়েছে বন্যার পানিতে। তা দেখে ব্যবসায়ীদের চোখে ছল ছল করছে জল। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রশাসন খোঁজ না নেওয়ায় অনেকে বোবা কান্নায় ক্ষোভ ঝাড়লেন।

দেখা গেছে, বন্যার পানি কমতে শুরু করে। গুদামের সাটার খুলতেই বেরিয়ে আসছে ধান-চাল পচা দুর্গন্ধ। মজুতকৃত ৫০ কেজির হাজার হাজার বস্তা চাল এবং ২ মন ওজনের ধানের বস্তার স্তূপ ভিজে পচন ধরেছে। কেউ স্যালো মেশিন লাগিয়ে সেচ দিয়ে গুদাম থেকে পানি সরাচ্ছেন। প্রতিটি গুদামে ঢুকেছে বন্যার পানি। হু হু করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় রাখার অভাবে আড়ৎদাররা ধান-চালের বস্তা সরানোর সময় পাননি।

ধান-চালের পচা দুর্গন্ধে এলাকার বাতাসও দুষিত হয়ে গেছে। যেগুলো এখন গো-খাদ্যেও ব্যবহার করার অনুপযুক্ত। ব্যবসায়ীদের এ ক্ষতি যেন চোখে দেখে সহ্য করার মতো নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের কাজিরবাজার মোস্তাক এন্ড ব্রাদার্সের ৫টি গুদামের এক একটিতে অন্তত সহস্রাধিক বস্তা করে চাল রাখা ছিল। যেগুলো বন্যার পানিতে পচে নষ্ট হয়ে গেছে। কোনোমতে কিছু চাল সরাতে পারলেও বেশিরভাগ বন্যার পানিতে ভিজে নষ্ট হয়েছে। একইভাবে এম এস অটো রাইস মিল, মতিন ব্রাদার্স, হাসান ব্রাদার্স, ফাইয়ান ও পদ্মা রাইস মিল, দয়া ও জামান মিল, রঙ্গেশ অটো রাইস মিলের হাজার হাজার বস্তা ধান-চাল রাখা ছিল। যেগুলো পচে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে।

মোস্তাক এন্ড ব্রাদার্সের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম জানান, ৫টি গুদামের প্রতিটিতে এক হাজার বস্তা চাল রাখা ছিল। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০ বস্তা চাল পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অথচ মেয়র কিংবা প্রশাসনের লোকজন খবরও নেননি। তার ভাইয়ের মিলেও হাজার হাজার বস্তা ধান চাল নষ্ট হয়েছে। এগুলো আর কোনো কাজে আসবে না। শুকিয়েও লাভ নেই।

তিনি বলেন, আমরা সরকারকে ট্যাক্স দেই। আমরা পথে বসে গেছি। আমাদের বিপদে সরকার পাশে থাকুক, এটা প্রত্যাশা করি।

রঙ্গেশ অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী গোবিন্দ চন্দ্র দেব বলেন, আমার গুদামে ১৪শ’ বস্তা চাল রাখা ছিল। এর মধ্যে ২০০ বস্তা ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।

এসএল অটো রাইস মিলের স্বত্বাধিকারী আব্দুল হান্নান জানান, বন্যার পানিতে এক হাজার বস্তা চাল ও ধান ভিজে পচে নষ্ট হয়ে ২০ লাখ টাকার উপরে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

এছাড়া আরো অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে শত শত বস্তা চাল ও ধান পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। ভিজে যাওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা গুদাম থেকে সেগুলো সরাতে পারেননি। ফলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়েছে।

ব্যবসায়ীরা বলেন, বন্যা ঠিকই চলে গেছে। তবে কোটি কোটি টাকার পণ্য নষ্ট করে দিয়ে গেল।

এদিকে, গ্রামীণ জনপদে বন্যা ও বৃষ্টির কারণে বোরো ধান শুকাতে না পারায় অনেকের ধনে চারা গজিয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, অতি বৃষ্টিতে ধান শুকানোর সুযোগ না পাওয়ায় বস্তার মধ্যে ধানের চারা গজিয়েছে।

বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকরা বলেন, এমনিতে বন্যায় প্রাণ বাঁচানো দায়, খাবার সংকট। তার ওপর ঘরে পানি উঠে প্রতিটি বাড়িতে রাখা ধান চারা গজিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বন্যার কারণে আয় রোজগার নেই, ত্রাণ যা মিলছে, তা দিয়ে হয়তো ২/৩ বেলা চলে, এরপর আর যাওয়ার জায়গা নেই। না খেয়ে মরা ছাড়া উপায় নেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত |Daynightsangbad24.com
Tech supported by Shimul Hossain